জুন ২৭, ২০২১: রবি দে-র লেখনীতে
অতিমারীর আতঙ্ককে পেছনে ঠেলে, টেলি/ভিডিও কনফারেরেন্সর স্থিতি জাড্য কাটিয়ে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এ বছরে এই প্রথম প্রবাস-বন্ধু সাহিত্য-সভার মুখোমুখি আসর বসেছিল চন্দ্রা ও রবি দে’র বাড়িতে – গুটি কয় উৎসাহী সদস্য-সদস্যার সাক্ষাৎ উপস্থিতিতে। শেষ সামনাসামনি সভাও বসেছিল দে দম্পতির বাড়িতে, ঠিক ১৬ মাস আগে, ২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০২০ তারিখে।স্বাভাবিক কারণে এই ঘরোয়া সভাটি কলেবরে ছোট হলেও সবার কাছে ছিল বিশেষ আনন্দের। সভার শুরুতে সফিক আহমেদ একটি স্বরচিত বড় গল্প পড়েন – গল্পের নাম ত্রিবেণী। সাহিত্য আসরে প্রথম দিকে সফিক বেশি কবিতাই লিখতেন, কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি একজন সুদক্ষ গল্পকার হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছেন। পিটসবার্গের কার্নেগি মেলন উনিভার্সিটির পটভূমিতে লেখা গল্পটি প্রকাশিত হতে চলেছে দেশে প্রসাদ প্রত্রিকার এবছরের পূজাবার্ষিকীতে।এরপর নীতা শেটকর, সদ্যপ্রয়াত লেখিকা নবনিতা দেবসেনের সদ্যপ্রকাশিত চন্দ্রাবতীর রামায়ণের ইংরেজি অনুবাদটির উপর একটি মনোজ্ঞ আলোচনা সঞ্চালন করেন। চন্দ্রাবতী বাংলা ভাষার প্রথম মহিলা কবি। তিনিই প্রথম কবি যিনি বাংলা ভাষায় সীতার নিজস্ব দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে রাম-সীতার গল্প বলেন। এই সমস্ত কারণে আধুনিক পাঠকের ও সাহিত্য গবেষকদের কাছে চিরন্তন এই গল্পটির ইংরেজি কাব্যকারে উপস্থাপনা খুবই প্রাসঙ্গিক ও মূলবান।এরপর রবি দে হোয়াটস্যাপে প্রকাশিত তার হাইস্কুলের সহপাঠী সুপ্রিয় লাহিড়ীর লেখা মা’র উপর একটি অন্তরঙ্গ স্বৃতিচারণ পাঠ করেন, যা সকলের মন ছুঁয়ে যায়। সামাজিক-তথা-গণ মাধ্যম গুলোর কল্যানে আজ অনেক উন্নত মানের লেখা এখন বড় প্রকাশনার সীমানা ছাড়িয়ে দিকবিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।সমাজের সাধারণ মানুষ অন্তর্জালে লিখছেন তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির জায়গা থেকে যা নিমেষে পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে, প্রকাশকের মধ্যস্হতা এড়িয়ে তৈরি হচ্ছে লেখক পাঠকের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। সাহিত্য পর্ব শেষ হয় নমিতা রায়চৌধুরীর করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রথযাত্রা’ কবিতার অপূর্ব আবৃত্তি দিয়ে। সব শেষে ছিল চা-টা র সাথে আড্ডা – সব মিলিয়ে খুবই উপভোগ্য।