পরবাসেও কলকাতা
সোমা ঘোষের কলম থেকে ……….
গত বছর আমি (সোমা ঘোষ) এই লাইন ক’টা লিখেছিলাম – একটা ছোট গল্পের মাঝখানে।
“আজন্ম যারা কলকাতায় বাস করেছে, তাদের হঠাৎ করে যদি প্রবাসে নির্বাসন দেওয়া হয়, তারা কলকাতা ছাড়লেও, কলকাতা তাদের ছাড়ে না। আর সেই সব খ্যাপারা বাকি জীবনটা তাদের নির্বাসনে খুঁজে খুঁজে মরে ফেলে আসা শহরের পুরনো অভ্যাসগুলো, সেই শহরটার শরীর থেকে ওঠা গন্ধগুলো, সেই শহরটার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্মৃতির কুঁচিগুলো – গরমের সাঁঝে ওঠা দখিন হাওয়ায় বেলফুলের গন্ধ, হঠাৎ ওঠা কালবৈশাখীর দমকা ঝড়, আচমকা এক পশলা বৃষ্টির ছাঁট, টাউন স্কুলের ফুচকা, গরমের সন্ধের জুঁই, বইপাড়া, শীতের ময়দান, মোড়ের মাথার চায়ের দোকানের মাটির ভাঁড়ের চা উইথ লেড়ো বিস্কুট, রাতে পাড়ার মিষ্টির দোকানের সদ্য আঁচ থেকে নামানো গরম রসগোল্লা, কারণে অকারণে বিরিয়ানি, শ্যাওলা পড়া উঠোনের এক কোণায় ভাঙ্গা, জং ধরা লোহার ড্রামটায়ে ফুটে থাকা এক ঝাঁক রক্তজবা। দেওয়ালের ফাটল বেয়ে ভাঙ্গা কার্নিশে যেমন বট অশ্বথের পুরুষ্টু শিকড়গুলো একটু একটু করে আস্তানা গেড়ে বসে, নির্বাসিত খ্যাপা মনে কলকাতাও সেইভাবে বাসা বেঁধে থাকে – যকের মত, মনের মণিকোঠা আগলে। সে খ্যাপা পরবাসেও কলকাতার ছোট ছোট সুখগুলো খুঁজে মরে।” – সব চরিত্র কাল্পনিক নয়।”
এই লেখা শুধু পাঠ ও বিনোদনের জন্য, কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়।
ছবি আন্তর্জাল থেকে: কৃতজ্ঞতা জানাই