বাংলা অক্ষর
বাংলা ভাষার অক্ষরগুলির সঙ্গে এর মাতৃকা সংস্কৃতের অনেক সাদৃশ্য আছে। বাংলায় স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ আলাদা করে লেখা হয়। এটি ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষা গোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে। বাংলা লিপি ‘ব্রাহ্মী লিপি’ থেকে উদ্ভূত, আর লেখার উৎস ‘দেবনাগরী’।
বাংলা ভাষাকে চর্যাপদের আমল থেকে আলাদা ভাষা বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল । ১৯০৭ সালে মাননীয় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীমহাশয় তাঁর নেপাল ভ্রমণের সময় নেপালের রাজসভা থেকে চর্যাপদের ৫০টি মতন গানের এক পুঁথি আবিষ্কার করেন। ওগুলি ছিল তালপাতায় লেখা। বাংলার ভাষা হিসেবে প্রথম আদি সন্ধানের এটিই প্রমাণ। অনুমান করা হয় ওগুলি দশম শতাব্দীতে লেখা।
বাংলায় সাধু ও চলিত দু রকমের ব্যবহার আছে, তবে সাধু ভাষা মূলত আগেকার দিনের বইয়ের ভাষা।
বাংলার স্বরবর্ণ আলাদা , এদের সংখ্যা ১২ হলেও একটির তো কোনো ব্যবহারই নেই, ৯ ।
এগুলি হলো :
অ আ ই ঈ উ উ ঋ ৯ এ ঐ ও ঔ
ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে জুড়লে এদের আলাদা চিহ্ন হয়ে যায়।
যেমন ক এর সঙ্গে :
ক+অ =ক
ক+আ=কা
ক+ ই=কি
ক+ঈ=কী
ক+উ=কু
ক+উ =কূ
ক+ঋ=কৃ
ক+৯=x x x
ক+এ=কে
ক+ঐ=কৈ
ক+ও=কো
ক+ঔ =কৌ
এবার বাঞ্জনবর্গের কথায় আসি : সংস্কৃতের মতোই উচ্চারণে বাংলায় প্রতিবর্গে এক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। যেমন :
Consonant class (বর্গ, barga, /bɔrgɔ/)
1st consonant (voiceless, not aspirated)
2nd consonant (voiceless, aspirated)
3rd consonant (voiced, not aspirated)
4th consonant (voiced, aspirated)
5th consonant (nasal)
ক-বর্গ (ka-barga, /kɔ bɔrgɔ/), Velars ক /k/ খ /kʰ/ গ /g/ ঘ /gʱ/ ঙ /ŋ/
চ-বর্গ (ca-barga, /t͡ʃɔ bɔrgɔ/), Palatals2 চ /t͡ʃ/ ছ /t͡ʃʰ/ জ /d͡ʒ/ ঝ /d͡ʒʱ/ ঞ /n/1
ট-বর্গ (ṭa-barga, /ʈɔ bɔrgɔ/), Retroflexes ট /ʈ/ ঠ /ʈʰ/ ড /ɖ/ ঢ /ɖʱ/ ণ /n/1
ত-বর্গ (ta-barga, /t̪ɔ bɔrgɔ/), Dentals ত /t/ থ /tʰ/ দ /d/ ধ /dʱ/ ন /n/1
প-বর্গ (pa-barga, /pɔ bɔrgɔ/), Bilabials প /p/ ফ /pʰ/ or /ɸ/3 ব /b/ ভ /bʱ/ or /β/3 ম /m/
বাংলার যুক্তাক্ষর হলো দুটি বা তিনটি ব্যঞ্জনবর্ণ যখন যুক্ত হয়ে পাশাপাশি শব্দ গঠন করে।
একবার নিয়মটি বুঝতে পারলে বাংলা কিন্তু মোটেই কঠিন কিছু নয়। বাংলার সাহিত্য সম্ভার এতো বিশাল যে ভাষা না জানলে তা উপভোগ করা যাবে না।