সোমা ঘোষ
সোমা ঘোষ হিউস্টনের বাসিন্দা গত তিন বছর। লেখালেখিতে সোমার উৎসাহ ও দক্ষতা বরাবর। ছোট গল্প আর রম্য রচনায় তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। তার নিজের ভাষায়,
‘মধ্য কলকাতার একটা সরু গলি। গলির শেষ মাথায় মান্ধাতার আমলের আস্তাবল। আস্তাবলের কোণে মল্লিকবাড়ির লড়ঝড়ে অস্টিনটার গ্যারাজ। তিনতলার খোলা ছাদ। ছাদের এক কোণায় বাবার ঠাকুমার হাতে পোঁতা লিলি ফুলের একটা ঝোপ। গরমের ছুটিতে, কাঠফাটা রোদে দিদার অন্ধকার ভাঁড়ারঘরে আচার চুরি।একতলার ঠান্ডা, স্যাঁতস্যাঁতে বৈঠকখানার ঘরে জানালার কোণে রাখা ভাইয়ার আরামকেদারায় বসে রাশি রাশি বই পড়া। সন্ধেবেলায় হেঁকে যাওয়া ‘কুলফি, কুলফি মালাই’। শালপাতায় অজগরের মত কুন্ডলী পাকিয়ে পড়ে থাকা জুঁই ফুলের মালা।
আকাশ কালো করে হঠাৎ এলো কালবৈশাখী। তুমুল বৃষ্টিতে শিল কুড়ানো। বই পাড়া। বিকেলবেলা। অলি গলি তস্য গলির গোলকধাঁধার হেঁয়ালি। কলেজ স্কোয়ার। নিঝুম দুপুরে মেডিকেল কলেজের ভিতর দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফেরা। অনেক এমন ছবি, প্রচুর স্মৃতি আর গপ্পো। এই আমি।
তাছাড়া সাংবাদিকতা নিয়ে স্নাতকোত্তর করে সাংবাদিক হিসাবে কর্মজীবন শুরু কলকাতায়। তারপর ভারতের রাজধানী দিল্লী আর মধ্য প্রাচ্যের একটি দেশ ঘুরে বোম্বে। বোম্বের গা ঘেঁষে ছড়িয়ে পড়া শহরতলির ঝিলের পাড়ে, আকাশের কাছাকাছি একটা জানালার ধারে বসে আমি কাগজে কলমে আবার লেখা শুরু করি। প্রথমে টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় ধারাবাহিক একটি ইংরাজি ব্লগ দিয়ে শুরু হয় আমার নতুন যাত্রা। কিছুদিন আনন্দবাজার পত্রিকার ব্লগে ‘পথে প্রবাসে’ নামক বাংলা ব্লগ লিখতাম। ২০১৫ সালে এই সময় সংবাদপত্রের ব্লগে আমার নতুন ব্লগ শুরু করি, নাম ‘শতরঞ্জ কে আনাড়ি’। আমি আজও শতরঞ্জ কে আনাড়ি – কিন্তু আজকাল আমেরিকার হিউস্টন শহরের আনাড়ি। তবে আমি কিন্তু ভালো মেয়ের মত রোজ নিয়ম করে লিখতে বসা লেখক নই। বেহ্সাবি মন আর বেয়াড়া কলম – এদের যখন ইচ্ছে করে, জেদ ধরে নিজের গল্প লিখব, তখন লিখি, খাতা খুলে, কাগজে কলম দিয়ে লিখি – আর তাই যখন তখন লিখি।
নেশার মধ্যে নানা দেশ দেখা, বই পড়া, ছবি তোলা আর ছবি ‘লেখার’ চেষ্টা। এই আমি।’