সুকুমার রায় (১৮৮৭-১৯২৩)
সুকুমার রায়ের জন্ম অক্টোবর ৩০, ১৮৮৭। তিনি উপেন্দ্রকিশোরের উপযুক্ত পুত্র আর সত্যজিৎ রায়ের বাবা। বাংলায় শিশু সাহিত্য পাঠে সুকুমারের নাম সবার আগে মনে আসে। তাঁর লেখা কুমড়োপটাশ বা গোঁফ-ওলা হেডঅফিসের বড়োবাবুর সঙ্গে আপামর বাঙালীর নিত্য যোগাযোগ। আবোলতাবোল, পাগলাদাশূ, হজবরল , তাঁর সৃষ্ট চরিত্র দাপিয়ে বেরিয়েছে বাংলা সাহিত্য, শিশু ও কিশোর মন এবং ওগুলি আজও একশো বছর পরেও আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে পদার্থ আর রসায়ন বিদ্যায় পাশ করে তিনি লন্ডনে যান Photo Engraving and Lithography পড়তে। বাবা উপেন্দ্রকিশোরের ছিল ক্সক্সক্স প্রতিষ্ঠান, তাই সুকুমার যাতে এই সংক্রান্ত তখনকার প্রযুক্তিবিদ্যা শিখে আসে ইউরোপ থেকে তাই তাকে লন্ডন পাঠানো। ইতিমধ্যে ননসেন্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে সুকুমারের । এই সময়ই ‘সন্দেশ ‘ পত্রিকার জন্ম। লন্ডন থেকে ফিরে সুকুমার ছোটদের জন্য সন্দেশে নিয়মিত লিখতে শুরু করলেন।
সুকুমার পরবর্তী কালে সুকুমার রায় সম্বন্ধে লিখেছেন,
‘উপেন্দ্রকিশোরের সম্পাদনাকালে সন্দেশে প্রকাশিত সুকুমারের কয়েকটি রচনায় তাঁর সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্যের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ১৯১৪ সালে বেরোল আবোল তাবোল শ্রেনীর প্রথম কবিতা “খিচুরি”। এই প্রথম সুকুমার সাহিত্যে উদ্ভট প্রানীর আবির্ভাব। এখানে প্রানীর সৃষ্টি হয়েছে ভাষার কারসাজিতে –
হাঁস ছিল সজারু, (ব্যাকরণ মানিনা)
হয়ে গেল হাঁসজারু কেমনে তা জানিনা।
এই উদ্ভট সন্ধির নিযমেই সৃষ্টি হল বকচ্ছপ, মোরগরু,গিরগিটিয়া, সিংহরিণ, হাতিমি।’
মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই তাঁর অনন্তধামে যাত্রা, তবু তাঁর চিহ্ন চিরদিনের মতো রয়ে গেছে আমাদের মনে ও বাংলা সাহিত্যে।